ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে মোহাম্মদ আলী (১৮) যুবকের গুলি লাগে। এই ঘটনায় ঢাকার সিএমএম কোর্টে মামলা করেছেন মোহাম্মদ আলীর বাবা মোমিন মিয়া। মামলায় আন্দোলনের সময় লালমনিরহাটে দায়িত্বরত সাংবাদিকের নাম ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
মোহাম্মদ আলী লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের মোমিন মিয়ার ছেলে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, লালমনিরহাটের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যাত্রাবাড়ি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে যোগ দিয়ে ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করে। যাত্রাবাড়ি হাইওয়ে সড়কের মাছের আড়তের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ যাত্রাবাড়ি থানার ওসি ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা মিছিল ছত্রভঙ্গ করে। এ সময় তাদের ছোড়া গুলি মোহাম্মদ আলীর কোমড়ের ডান পাশে লাগে। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়।
এই ঘটনায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ৮৩জনের নামে মামলা করে। ওই মামলায় লালমনিরহাটে দায়িত্বরত সাংবাদিক ফারুক আলমকে ৮০নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদি বলেন মোমিন মিয়া সাংবাদিক ফারুক আলমকে বলেন, মামলা করেছি। তালিকা করা হয়েছে। অনেকের সাথে কথা বলে তালিকা করা হয়েছে। মামলায় আপনার থাকার কথা নয়।
মামলার সাক্ষি ও মোমিনের ভায়রা ভাই রবিউল ইসলাম বলেন, আপনার নাম কি করে এলো তা সঠিক বলতে পারছিনা। আমরা আদালতে মামলা দেয়ার পরে থানায় পাঠাবে। এফআইআর ভুক্ত হবে। তারপর চার্যসিট হবে। তখন মামলার বিস্তারিত বলা যাবে।আপনার নাম থাকার কথা নয়। থাকলে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। সংশোধন করা যাবে। আমরা বাড়ি ফিরেই আপনার সাথে কথা বলবো।
তবে, স্থানীয় একাধিক সূত্র ও উচ্চ পর্যায়ের বিএনপি সূত্র বলছে, আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ ও স্থানীয় দুইচারজন বিএনপি কর্মীর যোগসাজশে এ রকম ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন। রাতের বেলা তপন ঘোষ ও রনি নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ককে আন্দোলনের প্রথম থেকে এক সাথে দেখা যায়। সরকার পতনের পর হঠাৎ রনির চলাফেরা পরিবর্তন হয়। কিনে ফেলে নতুন গাড়ি।
আওয়ামী লীগের ভাদাই ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ বলেন, আমার কাছে মামলার কপি কেবল একজন পাঠিয়েছে। দেখে বলতে পারবো।
এ বিষয়ে সাংবাদিক ফারুক আলম বলেন, আমি ঘটনার সময় লালমনিরহাট জেলায় কর্মরত ছিলাম।সেই সময় ছাত্র সমন্বয়ক, আওয়ামী লীগের লোকজনসহ পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখি। তিস্তা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত সর্বস্তরের কাছে তার প্রমাণ রয়েছে। বেশ কিছু সরকারি দপ্তরের সিসিটিভি ফুটেজও তার প্রমাণ বহন করে। একজন সংবাদকর্মী হিসাবে এমন পরিস্থিতিতে জেলা ত্যাগ করার কোনো সুযোগ নেই।